চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
বলা হচ্ছে যে আমাদের এই প্রজন্ম দিয়ে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব শুরু হয়েছে , আর এই বিপ্লবকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কী এই প্রযুক্তি? যার পিছনে গুগল ,ফেইসবুক ,আমাজন আর মত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়েছে , গবেষণা করতে খরচ করছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার।
এত টাকা খরচ , তার ফলাফল অবশ্য পেতে শুরু করেছে। মিথ্যা খবর ,ফেইসবুক এর সুনামকে কবর দেওয়ার জোগাড় করেছে। বলাহয় যে ফেইসবুকের মিথ্যা নিউজের জন্য হিলারি হেরে গেছে, আর ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে , শেষে এসে ট্রাম্প কার্ড দেখিয়ে বাগিয়ে নিয়েছে আমেরিকার ক্ষমতা। ফেইসবুক ঘোষণা দিয়েছে যে , ফেক নিউজ খুঁজেপেতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করবে।তার জন্য এলগোরিদম প্রস্তুত করয়েছে তারা।
পিছিয়ে নেই গুগলও , এইবার গুগল আইও(এটা গুগল এর একটা বার্ষিক সম্মেলন ,যেখানে বছরের তাদের নতুন প্রজুক্তি গুলো প্রকাশ করা হয় , আবার ১০ থেকে ১১ মে অনুষ্ঠিত হয় ) তে তারা যেন এআই ম্যাজিক দেখিয়েছে। তাদের বেশিরভাগ প্রজুক্তি ছিল মেশিনে লার্নিং (এটা হলো আই এর একটা প্রধান অংশ ) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মাধ্যমে ডেভলপ করা।
তার মধ্যে যার কথা না বলেই নয়. তা হলো ,গুগল স্মার্ট অ্যাসিস্ট্যান্স বা গুগলের হোম ।
মনে করুন আপনি একদিন তাকে বলেন "হেই গুগল ,আমার জন্য ডাক্তার আবুল আর একটা সিরিয়াল কর , যেন তা শনি বার দুপুর বারটার মধ্যে হয়।
আপনার ফোনের কললিস্ট হতে অটোমেটিক একটা কল যাবে ডাক্তার আবুল এর নম্বরে। তারপর। ..........
আবুল এর চেম্বার : আবুলের চেম্বার বলছি ,আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি ?
গুগল স্মার্ট অ্যাসিস্ট্যান্স : ডাক্তার আবুলের , একটা সিরিয়াল দরকার , আগামী শনিবার সকাল ১০ টা....
আবুল এর চেম্বার : দঃখিত ম্যাডাম ,শনিবার সকাল ১০টা এখন আর পাওয়া যাবে না
গুগল স্মার্ট অ্যাসিস্ট্যান্স : তাহলে দুপুর ১২ টার মধ্যে কোন সময়........
আবুল এর চেম্বার : একটু অপেক্ষা করুন প্লিজ।
গুগল স্মার্ট অ্যাসিস্ট্যান্স : হুম .......
আবুল এর চেম্বার : হ্যা, পাওয়া যাবে আপনার নামটা বলুন ?
গুগল স্মার্ট অ্যাসিস্ট্যান্স : দুঃখিত ,রুগী আমি না ,আমি ওনার অ্যাসিস্ট্যান্স। ওনার নাম রৌসুল ......
( কথাগুলো বাংলাতে অনুমান করা , গুগল স্মার্ট অ্যাসিস্ট্যান্স এখনো বাংলা শিখেনি )
এই হল বিনা বেতনের আপনার বুদ্ধিমান অ্যাসিস্ট্যান্স। একে দিয়ে আপনি সকালের পত্রিকা শুনতে পারবেন ,নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন স্মার্ট হোমের সব যন্ত্রকে(লাইট ফ্যান , টিভি )। এটাকে বাজারে গুগল হোম নাম পাওয়া যায়।
মনে করুন আপনি বললেন :
hie, google now movie time
আপনি দেখবেন অটোমেটিকলি আপনার লাইটের আলো কমে যাবে , টিভি ও হবে , আর ঘরে যদি স্মার্ট পপকর্ন মেশিন থাকে। তাহলেতো পপকর্নও হাজির ....
তাহলে আপনাকে যদি বলা হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো সেই ব্যবস্থা যেখানে যন্ত্রকে শেখানো হয় , যাতে যন্ত্রও মানুষের মতো ভাবতে পারে , সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
আরো পড়ুন :আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স পর্ব : ১ গুগল ড্রাইভেরলেস কার
প্রয়াত সর্বককের সেরা পদার্থ বিজ্ঞানীদের অন্যতম স্টিভেন হকিং এর একটি কথা না বলেই নয় " কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো মানব সভ্যতার হয় সর্বশ্রেষ্ট আবিষ্কার নয়তো , সর্ব নিকৃষ্ট আবিষ্কার " তিনি মানুষকে অন্য গ্রহে বসবাসের জায়গা খুজতে বলেছেন। তার মতে হয়তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এর হাতেই মানব স তার ধ্বংস হবে। যারা একটু হলিউড মুভি বেশি দেখেন তাদের কাছে হয়তো ব্যাপারটা একটু হইলেও আন্দাজ আসে যে , বুদ্ধিমান রোবট কি করতে পারে। স্টিভেন হকিং হলিউড মুভি দেখতো কিনা আমি জানি না .........
বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে তিন ভাবে ভাগ করেছে।
ANI=Artificial Narrow Intelligence
AGI=Artificial General Intelligence
ASI=Artificial Supper Intelligence
আমাদের মাধ্যমে যেহেতু শুরু হয়েছে তাই , তাই আমরা আছি ANI=Artificial Narrow Intelligence এ। এই যন্ত্র গুলো মানুষের চাইতে কিসুটা কমবুদ্ধিমান হবে। তারা মোটামুটি একটা কত বাচ্চার মতো চিন্তা শক্তির অধিকারী হবে বা একটা ১৪ বছর বয়স্ক বাচ্চার মতো। গুগল ড্রাইভেরলেস কার , রান্নাকরার রোবট , রোবট কুকুর এই পর্যায়ে পরে।
AGI=Artificial General Intelligence এই পর্যায়ে মানুষ রোবট হবে সমানে সমান। কোনো কোনো বিজ্ঞানীর মতে হয়তো তা ২১০০ সালে শুরু হবে আর কেউ আরো এগিয়ে তাদের মতে ২০৫০ মধ্যে রোবট রা বা যন্ত্ররা এই সক্ষমতা অর্জন করবে। কি হবে তখন ....... হয়তো আমাদের নাতি নাতনিরা স্কুল থেকে এসে গল্প করবে , তাদের রোবট টিচারের। তখন আর মানুষের ডাক্তার আর দরকার পড়বে না ,এমনকি গবেষণার মতো কাজ করবে মেশিন। মহাকাশ গবেষণা ,আন্ত গ্যালাক্সি অভিযান অনেক সহজ হয়ে আসবে।
ASI=Artificial Supper Intelligence যারা নিয়মিত হলিউড মুভি দেখেন তারাতো জানেনই , রোবট ক্ষমতা পেলে কি হতে পারে। যদিও বিজ্ঞানীর আসংখ্যা এটা অতন্ত এ শতাব্দীতে হবে না , সুতরাং এটা নিয়া আমাদের চিন্তা করে লাভ নাই কেননা বাংলাতে একটা কথা আছে "আপনি বাঁচলে নাতি নাতনির নাম"।
রৌসুল আজম সুমন
ব্লগার
No comments